October 2025

 জুলাই সনদ বাস্তবায়ন সুপারিশে ঐক্যে ধাক্কা: রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সতর্কবার্তা



জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দেওয়া সর্বশেষ সুপারিশ রাজনৈতিক ঐক্যকে সংকটের মুখে ফেলেছে বলে মন্তব্য করেছে বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন।
সংকট এড়াতে কমিশনকে দ্রুত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নতুন করে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।

বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের পক্ষ থেকে বলা হয়,
জুলাই অভ্যুত্থানের পর জনগণের সংস্কার প্রত্যাশা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দীর্ঘ পাঁচ মাসের আলোচনার ভিত্তিতে ঐকমত্য কমিশন যে সুপারিশ প্রকাশ করেছে, তা তাদের গড়ে তোলা ঐক্যকে প্রশ্নের মুখে ঠেলে দিয়েছে।

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, কমিশন জুলাই সনদ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যে সীমিত পরিসরে আলোচনা করেছে, সেখানে প্রস্তাবিত বাস্তবায়ন পদ্ধতির বিস্তারিত উপস্থাপন করা হয়নি।
যদি আলোচনা শেষে পারস্পরিক সমঝোতার ভিত্তিতে প্রস্তাবটি জাতির সামনে আনা হতো, তাহলে এই বিরোধ ও বিভ্রান্তি তৈরি হতো না।

রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন আরও জানায়, জুলাই সনদ নিয়ে আলোচনার সময় রাজনৈতিক দলগুলো গণভোটের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ সংসদকে সংবিধান সংস্কারের ক্ষমতা দেওয়ার বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছিল।
তবে যেসব প্রস্তাবে কিছু দল আপত্তি জানিয়েছিল, সেগুলো কীভাবে বাস্তবায়ন করা হবে সে বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
পরবর্তীতে ঐ আপত্তিগুলো সুপারিশের চূড়ান্ত খসড়া থেকে বাদ দেওয়ায় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে স্বাভাবিকভাবেই অসন্তোষ তৈরি হয়েছে।

সংগঠনটি সতর্ক করে জানায়, কমিশনের এই অবস্থান থেকে দ্রুত সরে না এলে রাজনৈতিক দলগুলোর অভ্যন্তরীণ ক্ষোভ সাধারণ জনগণের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়তে পারে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, দেশ যখন নির্বাচনের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত, তখন রাজনৈতিক দলের একাংশের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
এভাবে চলতে থাকলে আসন্ন নির্বাচনও বিতর্কিত হয়ে উঠতে পারে, যা দেশের স্থিতিশীলতা ও গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রার জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।

রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন জোর দিয়ে বলেছে, সংবিধানকে টেকসই ও সর্বজনীন করতে হলে তাড়াহুড়ো নয়, বরং আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতাই হতে হবে মূল পথ।
তারা আশা প্রকাশ করেছে, ঐকমত্য কমিশন রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও যুক্তিবোধের পরিচয় দিয়ে জাতিকে নতুন কোনো সংকটে না ফেলেই একটি ভারসাম্যপূর্ণ সমাধানের পথে এগিয়ে যাবে।


atOptions = { 'key' : 'bcfaed92942c1c6965645b62d8dce5b4', 'format' : 'iframe', 'height' : 50, 'width' : 320, 'params' : {} };

>

What diseases can cats get in winter? Give me some characteristics

শীতকালে বিড়ালের কি কি রোগ হতে পারে। কয়েকটি বৈশিষ্ট্য? 



Some common diseases or physical problems are seen in cats in winter, because their immune system becomes somewhat weak in cold weather. Below are some common diseases of cats in winter and their characteristics 👇

---

### 🧊 1. Cat Cold / Feline Upper Respiratory Infection

**Characteristics:**

* Runny or stuffy nose
* Red or watery eyes
* Sneezing or coughing
* Loss of appetite
* Lethargy

---

### ❄️ 2. Hypothermia**

**Characteristics:**

* Abnormal decrease in body temperature
* Shivering or feeling cold
* Lethargy
* Slow breathing and heartbeat

atOptions = { 'key' : '8b7680e48cecb0323882de26b8b63750', 'format' : 'iframe', 'height' : 60, 'width' : 468, 'params' : {} }; >

### 🧤 3. Arthritis or joint pain (Arthritis)**

**Features:**

* Difficulty walking or jumping
* Sleeping for a long time
* Stiffness
* Not being as active as before

---

### 🌬️ 4. Pneumonia**

**Features:**

* Rapid or heavy breathing
* Coughing
* Fever
* Lethargy
* Not eating


### 🍽️ 5. Loss of Appetite & Dehydration**

**Features:**

* Stopping eating or eating very little
* Dry skin
* Decreased energy
* Lethargy or drowsiness



### 💡 **Additional tips:**

* Keep the cat away from cold air.
* Provide a warm bed or blanket.
* Provide warm water regularly (to maintain adequate hydration).
* Maintain vaccinations and regular checkups.

শীতকালে বিড়ালদের মধ্যে কিছু সাধারণ রোগ বা শারীরিক সমস্যা দেখা যায়, কারণ ঠান্ডা আবহাওয়ায় তাদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কিছুটা দুর্বল হয়ে যায়। নিচে শীতকালে বিড়ালের কিছু সাধারণ রোগ ও তাদের বৈশিষ্ট্য দেওয়া হলো 👇


🧊 ১. সর্দি বা ঠান্ডা (Cat Cold / Feline Upper Respiratory Infection)

বৈশিষ্ট্য:

  • নাক দিয়ে পানি পড়া বা বন্ধ নাক

  • F

    চোখ লাল হওয়া বা পানি পড়া

  • হাঁচি বা কাশি

  • খাওয়ার রুচি কমে যাওয়া

  • নিস্তেজ ভাব


❄️ ২. হাইপোথারমিয়া (Hypothermia)

বৈশিষ্ট্য:

  • শরীরের তাপমাত্রা অস্বাভাবিকভাবে কমে যাওয়া

  • শরীর কাঁপা বা ঠান্ডা অনুভব করা

  • নিস্তেজ হয়ে যাওয়া

  • শ্বাস ও হার্টবিট ধীর হয়ে যাওয়া


🧤 ৩. আর্থ্রাইটিস বা জয়েন্ট ব্যথা (Arthritis)

বৈশিষ্ট্য:

  • হাঁটা বা লাফানোর সময় কষ্ট পাওয়া

  • বেশি সময় ঘুমানো

  • শরীর শক্ত হয়ে যাওয়া

  • আগের মতো চঞ্চল না থাকা


🌬️ ৪. নিউমোনিয়া (Pneumonia)

বৈশিষ্ট্য:

  • দ্রুত বা ভারী শ্বাস নেওয়া

  • কাশি

  • জ্বর

  • নিস্তেজতা

  • খাওয়া না খাওয়া


atOptions = { 'key' : '8b7680e48cecb0323882de26b8b63750', 'format' : 'iframe', 'height' : 60, 'width' : 468, 'params' : {} }; >

🍽️ ৫. ক্ষুধামান্দ্য ও ডিহাইড্রেশন (Loss of Appetite & Dehydration)

বৈশিষ্ট্য:

  • খাওয়া বন্ধ করা বা খুব কম খাওয়া

  • চামড়া শুকিয়ে যাওয়া

  • শক্তি কমে যাওয়া

  • নিস্তেজ বা ঘুম ঘুম ভাব


💡 অতিরিক্ত টিপস:

  • বিড়ালকে ঠান্ডা বাতাস থেকে দূরে রাখুন।

  • গরম বিছানা বা কম্বল দিন।

  • নিয়মিত গরম পানি দিন (পর্যাপ্ত হাইড্রেশন বজায় রাখতে)।

  • ভ্যাকসিন ও নিয়মিত চেকআপ বজায় রাখুন।


AAAA

 

মিরসরাইয়ে পিকআপ-অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে মা-ছেলের মৃত্যু



চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে পিকআপ ভ্যান ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে মা ও ছেলে নিহত হয়েছেন। আজ রোববার বেলা তিনটার দিকে উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নের ফরেস্ট অফিস এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত দুজন হলেন ফটিকছড়ি উপজেলার ভূজপুর থানার মোহাম্মদপুর গ্রামের জাকির মিয়ার স্ত্রী রাবেয়া বেগম (৪০) ও তাঁর ছেলে মো. হোসাইন (১২)। এ ঘটনায় আরও দুজন আহত হয়েছেন। স্থানীয় লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে মিরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মা–ছেলেকে মৃত ঘোষণা করেন।

atOptions = { 'key' : 'f47a10f8154cfcde3a9383d6eb648a66', 'format' : 'iframe', 'height' : 250, 'width' : 300, 'params' : {} };

>


পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, করেরহাট বাজার থেকে খাগড়াছড়ির রামগড়গামী একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ফরেস্ট অফিস এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি পিকআপ ভ্যানের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে অটোরিকশাটি দুমড়েমুচড়ে যায় এবং মা–ছেলে ঘটনাস্থলেই মারা যান। দুর্ঘটনার পর কিছু সময়ের জন্য ওই সড়কে যান চলাচল বন্ধ ছিল। পরে পুলিশ গিয়ে তা স্বাভাবিক করে।

মিরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক বাঁধন দাস প্রথম আলোকে বলেন, বিকেল চারটার দিকে মা ও ছেলেকে হাসপাতালে আনা হয়। হাসপাতালে আনার আগেই তাঁদের মৃত্যু হয়। দুজনেরই মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর আঘাতের চিহ্ন ছিল।

জোরারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম আবদুল হালিম বলেন, দুর্ঘটনাকবলিত অটোরিকশাটি উদ্ধার করা হয়েছে। পিকআপচালক ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে গেছেন। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

atOptions = { 'key' : 'f47a10f8154cfcde3a9383d6eb648a66', 'format' : 'iframe', 'height' : 250, 'width' : 300, 'params' : {} };

>



 

গুম–খুনের বিচার নিশ্চিত, আ.লীগের কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আহ্বান


বাংলাদেশে মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে সংস্কারপ্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি নতুন করে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা রোধে একগুচ্ছ ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে চিঠি লিখেছে ছয়টি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা। গতকাল রোববার যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের (এইচআরডব্লিউ) ওয়েবসাইটে ওই চিঠি প্রকাশ করা হয়েছে।

চিঠিটি দিয়েছে এইচআরডব্লিউ, বিশ্বজুড়ে সাংবাদিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করা নিউইয়র্কভিত্তিক সংস্থা কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্ট (সিপিজে), বিশ্বজুড়ে নাগরিক সমাজের অধিকার রক্ষায় কাজ করা দক্ষিণ আফ্রিকাভিত্তিক সংস্থা সিভিকাস, রোহিঙ্গাদের অধিকার নিয়ে বিশেষভাবে কাজ করা মানবাধিকার সংগঠন থাইল্যান্ডভিত্তিক ফোরটিফাই রাইটস, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন রবার্ট এফ কেনেডি হিউম্যান রাইটস ও টেক গ্লোবাল ইনস্টিটিউট।

প্রিয় প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস,

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশন চলাকালে বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করার জন্য আমাদের আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য আপনার প্রতি আমরা গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। জুলাই বিপ্লব ও শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার মৌলিক স্বাধীনতা পুনর্বহাল, আইন সংস্কার, গুম ও অন্যান্য নিপীড়নের তদন্ত করতে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে।

২০২৬ সালের নির্বাচনের আগে যে অল্প সময় রয়েছে, সেই সময়ে আমরা আপনার প্রতি মানবাধিকার রক্ষার পরিসর বাড়ানোর আহ্বান জানাচ্ছি। একই সঙ্গে বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের নিশ্চয়তা বিধান এবং ভবিষ্যতে পরিস্থিতির অধঃপতন ঠেকানোর জন্য প্রয়োজনীয় শক্তিশালী প্রতিষ্ঠানসমূহ নিশ্চিত করতে আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন যে নিরাপত্তা খাত এখনো সংস্কার হয়নি এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা জবাবদিহি ও সংস্কারপ্রচেষ্টায় সম্পূর্ণভাবে সহযোগিতা করছেন না। অন্তর্বর্তী সরকারকে অবশ্যই বিগত সরকারের অধীনে সংঘটিত গুরুতর নিপীড়নের জন্য বিচার নিশ্চিত করতে আরও পদক্ষেপ নিতে হবে, একই সঙ্গে অবিলম্বে চলমান নির্বিচার গ্রেপ্তার ও আটক বন্ধ করতে হবে। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের সদস্যদের বিরুদ্ধে দায়ের করা সেসব মামলাও রয়েছে, যেগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মনে হয় এবং গ্রহণযোগ্য তথ্য–প্রমাণের ঘাটতি রয়েছে।

জাতিসংঘে রোহিঙ্গা বিষয়ে উচ্চপর্যায়ের সম্মেলনে আপনি উল্লেখ করেছিলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রত্যাবাসনই এই সংকটের একমাত্র সমাধান এবং জরুরি প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে যারা নতুন এসেছে, তাদের দ্রুত প্রত্যাবাসনের সুযোগ দিতে হবে। রোহিঙ্গা শরণার্থীরা দীর্ঘ দিন ধরে মিয়ানমারে নিজেদের বাড়িতে ফিরে যাওয়ার চূড়ান্ত লক্ষ্যের ওপর গুরুত্ব দিয়ে আসছেন। তবে ২০২৩ সালের শেষ পর্যায় থেকে শুরু করে আসা দেড় লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীসহ সব রোহিঙ্গার জন্যই মিয়ানমারের কোনো অংশই এখন স্বেচ্ছায়, মর্যাদাপূর্ণ ও টেকসই প্রত্যাবাসনের জন্য নিরাপদ নয়।

বাংলাদেশে বসবাসকারী সবার অধিকার ও স্বাধীনতা রক্ষার জন্য আমরা আপনাকে দ্রুত নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি:

জুলাই অভ্যুত্থান চলাকালে এবং বিগত ১৫ বছরে সংঘটিত গুরুতর নিপীড়নের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহি নিশ্চিত করুন। এসব অপরাধের মধ্যে গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও নির্যাতনের ঘটনা রয়েছে। গুম ও নির্যাতনের জন্য মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় র‌্যাব ও ডিজিএফআইয়ের কর্মকর্তাসহ সেনাবাহিনীর বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গ্রহণ ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি)। সেনাবাহিনীর সদস্যদের বিষয়ে বেসামরিক আদালত আইসিটির এখতিয়ারের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনসহ জবাবদিহির এসব প্রচেষ্টায় সেনাবাহিনীর পূর্ণ সহায়তা দেওয়া উচিত। প্রাতিষ্ঠানিক বা রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতানির্বিশেষে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিচারিক প্রক্রিয়া যেন আন্তর্জাতিক মানদণ্ড বজায় রেখে সম্পন্ন করতে পারে, তা নিশ্চিত করার জন্য আইসিটিকে প্রয়োজনীয় আইনি কাঠামো, সম্পদ ও স্বাধীনতা দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। আইসিটির অধীন মামলাগুলোসহ সব ক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ড প্রদান স্থগিত রাখার বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের ঘোষণা দেওয়া উচিত।

অতীতের ধারা ভেঙে ফেলতে এবং মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) বিলুপ্ত করা এবং ডাইরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্সের (ডিজিএফআই) ক্ষমতা সীমিত করাসহ নিরাপত্তা খাত সংস্কার করুন। দায়মুক্তি নিয়ে র‌্যাবের গুরুতর অপরাধ সংঘটনের রেকর্ড প্রতিষ্ঠানটিকে সংস্কারের বাইরে নিয়ে গেছে এবং সামরিক বাহিনীর সব কর্মীকে বেসামরিক আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলো থেকে সরিয়ে দেওয়া উচিত। গুম ও অন্যান্য গুরুতর নিপীড়নে ডিজিএফআইয়ের সম্পৃক্ততা এর ভূমিকা ও ক্ষমতা কেবল সামরিক গোয়েন্দা কাজে সীমিত করার প্রয়োজনীয়তাকে তুলে ধরে। একই সঙ্গে এর কার্যক্রম সীমাবদ্ধ এবং স্পষ্ট আইনগত ম্যান্ডেট থাকা আবশ্যক।

গুমকে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী অপরাধ হিসেবে স্বীকৃতি দিন এবং গুমবিষয়ক তদন্ত কমিশনকে তাদের ম্যান্ডেট সম্পূর্ণ করতে সহায়তা দিন। অন্তর্বর্তী সরকারকে খসড়া ‘এনফোর্সড ডিজঅ্যাপিয়ারেন্স প্রিভেনশন অ্যান্ড রেড্রেস অর্ডিন্যান্স’ গ্রহণ করতে হবে, তবে এর আগে নিশ্চিত করতে হবে যে এটি ‘ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন ফর দ্য প্রোটেকশন অব অল পারসনস ফ্রম এনফোর্সড ডিজঅ্যাপিয়ারেন্স’সহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়েছে এবং এ ধরনের অপরাধের জন্য মৃত্যুদণ্ড বাদ দেওয়া হয়েছে। গুমবিষয়ক তদন্ত কমিশন যেন তাদের ম্যান্ডেট সম্পূর্ণ করতে পারে, সে জন্য তাদের পর্যাপ্ত সময় ও সম্পদ পাওয়াটা অন্তর্বর্তী সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে এবং নিরাপত্তা বাহিনীকে তদন্তে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করতে হবে, যার মধ্যে আটক কেন্দ্রগুলোতে অবাধ প্রবেশের নিশ্চয়তা এবং সব প্রাসঙ্গিক নথি দেখার–লাভের সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।

প্যারিস নীতির আলোকে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে (এনএইচআরসি) সংস্কার করতে হবে, যাতে এর কার্যকারিতা নিশ্চিত হয় এবং এর কার্যক্রম, সদস্য নির্বাচন ও অর্থায়নে রাজনৈতিক প্রভাব থেকে স্বাধীনতা বজায় থাকে। এনএইচআরসির স্বাধীনভাবে নিরাপত্তা বাহিনী এবং অন্যান্য রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ওঠা নিপীড়নের অভিযোগ স্বাধীনভাবে তদন্ত করার ক্ষমতা থাকতে হবে এবং এর ম্যান্ডেটকে শুধু দেশীয় আইন অনুযায়ী অধিকারগুলোর মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদণ্ড অনুযায়ী পরিচালিত করতে হবে।

সাইবার নিরাপত্তা অধ্যাদেশ ২০২৫ এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও অন্যান্য মৌলিক অধিকার সীমিত করতে ব্যবহৃত নিপীড়নমূলক আইনসমূহ; যার মধ্যে সন্ত্রাসবিরোধী আইন, বিশেষ ক্ষমতা আইন, অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট এবং দণ্ডবিধির আওতায় ফৌজদারি মানহানি—এসব আইন আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী বাতিল বা সংশোধন করুন। অন্তর্বর্তী সরকার সাইবার নিরাপত্তা আইন, ২০২৩ বাতিল করলেও এর জায়গায় আনা সাইবার নিরাপত্তা অধ্যাদেশ ২০২৫ আন্তর্জাতিক মান পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে এবং এতে বিভিন্ন অস্পষ্ট ধারা রয়েছে, যেগুলো রাষ্ট্রের অতিরিক্ত হস্তক্ষেপের গুরুতর ঝুঁকি তৈরি করেছে।


ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা অধ্যাদেশ এবং জাতীয় উপাত্ত ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশের আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী সংশোধন করুন। কারণ, এগুলোতে রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষের জন্য বিরাট ছাড় থাকবে। এসব খসড়া যেন প্রকৃতপক্ষে ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা নিশ্চিত করে এবং রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন ও অযাচিত নজরদারি রোধ করা যায়, সে জন্য এগুলোর সংশোধন করতে হবে। অধ্যাদেশগুলো যেন অধিকারভিত্তিক হয় এবং এতে বিশ্বের সেরা চর্চাগুলোর প্রতিফলন থাকে, তা নিশ্চিত করতে অংশীজনদের সঙ্গে অর্থবহ সংলাপ আবশ্যক।

সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করুন এবং সাংবাদিকদের নির্বিচার গ্রেপ্তার ও আটক থেকে রক্ষা করুন, তাদের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা যা–ই মনে করা হোক না কেন। বিশেষ করে যেখানে অভিযোগের পক্ষে গ্রহণযোগ্য প্রমাণ নেই অথবা যখন গ্রেপ্তার বা আটকের ঘটনা মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বা অন্যান্য অধিকার লঙ্ঘন করে। আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি সাংবাদিকদের রাষ্ট্রীয় বাহিনী ও সংস্থা এবং তার বাইরের অন্যদের হয়রানি ও সহিংসতা থেকে রক্ষা করার এবং কোনো হামলার ক্ষেত্রে দ্রুত, স্বাধীন তদন্ত পরিচালনা করার আহ্বান জানাচ্ছি। পাশাপাশি সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা বিষয়ে আন্তর্জাতিক আইনের সামঞ্জস্যপূর্ণ যেসব সুপারিশ গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন করেছে, সেগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে।

নির্বিচার গ্রেপ্তার ও আটক রোধ করুন এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বা মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বা অন্যান্য মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন করে এমন সব মামলা প্রত্যাহার বা খারিজ করার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার ব্যবস্থা করুন। অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা–নির্বিশেষে ২০২৪ সালের আগস্টের আগে ও পরে দায়ের করা ওই ধরনের সব মামলা পর্যালোচনা ও খারিজ করা। এসব মামলার মধ্যে আওয়ামী লীগের সদস্য ও সমর্থক যাঁরা অপরাধের সঙ্গে যুক্ত থাকার গ্রহণযোগ্য প্রমাণ ছাড়া দোষী অভিযুক্ত বা আটক রয়েছেন, তাঁদেরও অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় আওয়ামী লীগের কার্যক্রমের ওপর বিস্তৃত পরিসরে বিদ্যমান নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করুন। এ আইনের আওতায় সভা, সমাবেশ ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে অতিমাত্রায় সীমিত করা হয়েছে এবং তা শান্তিপূর্ণ কার্যক্রমে যুক্ত আওয়ামী লীগের সদস্য ও সমর্থক হিসেবে বিবেচিত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করতে ব্যবহার করা হচ্ছে। ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে দেওয়া জাতিসংঘের সত্য অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে যেমনটি সুপারিশ করা হয়েছিল, ওই প্রতিবেদনে আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ার কথা বলা হয়—অন্তর্বর্তী সরকারকে অবশ্যই রাজনৈতিক দলের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রদান থেকে বিরত থাকতে হবে। এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা প্রকৃত বহুদলীয় গণতন্ত্রে ফেরার পথ বাধাগ্রস্ত করবে এবং বাংলাদেশি ভোটারদের বড় অংশকে কার্যত বঞ্চিত করবে।

নাগরিক সমাজের সংস্থাগুলোর তহবিল ও কার্যক্রমের ওপর আরোপিত বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করুন এবং এনজিও–বিষয়ক ব্যুরো সংস্কার করুন। এনজিও–বিষয়ক ব্যুরো অতীতে নাগরিক সমাজের সংস্থাগুলোর ওপর নজরদারি ও হয়রানি করার জন্য রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে এসেছে। এগুলোর মধ্যে প্রকল্প ও আন্তর্জাতিক তহবিলের অনুমোদন বিলম্ব বা বাতিল করার মতো বিষয় রয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের জরুরি ভিত্তিতে এনজিও–বিষয়ক ব্যুরো এবং বিদেশি অনুদান (স্বেচ্ছাসেবী কার্যক্রমে) রেগুলেশন আইন পর্যালোচনা ও সংস্কার করা উচিত, যাতে বিধিনিষেধ ছাড়া আন্তর্জাতিক তহবিল প্রাপ্তি বা অন্য ধরনের অতিরিক্ত নজরদারির অধীনে না থেকে নাগরিক সমাজ স্বাধীনভাবে কার্যক্রম চালাতে পারে।

রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জোরপূর্বক প্রত্যাবাসন থেকে রক্ষা করুন এবং তাদের চলাফেরা, জীবিকা ও শিক্ষার স্বাধীনতার ওপর আরোপিত বিধিনিষেধ কমিয়ে দিন। ২০২৩ সালের শেষ দিক থেকে এখন পর্যন্ত পালিয়ে আসা দেড় লাখের বেশি রোহিঙ্গাসহ বাংলাদেশে থাকা ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গার কারও জন্য রাখাইন রাজ্যসহ মিয়ানমারের কোনো অংশ বর্তমানে স্বেচ্ছায়, নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ ও টেকসই প্রত্যাবাসনের জন্য নিরাপদ নয়। আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি পরিস্থিতি এমন অবস্থায় থাকা পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের জোর করে মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন ঠেকানোর আহ্বান জানাচ্ছি। এ ছাড়া অন্তর্বর্তী সরকারের শরণার্থীশিবিরে চলাফেরা, জীবিকার সুযোগ এবং আনুষ্ঠানিক শিক্ষায় প্রবেশের ওপর আরোপিত বিধিনিষেধ কমানো উচিত। যখন অনুদান কমে যাচ্ছে, এমন সময়ে শরণার্থীশিবিরের পরিস্থিতি উন্নয়ন, ত্রাণের ওপর নির্ভরতা কমানো এবং শরণার্থীদের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করার জন্য এসব সুযোগ আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

 আইসিসি চাইলে তাঁকে গ্রেপ্তার এবং এই আদালতের কাছে হস্তান্তরের মতো বিষয় রয়েছে।

 

ফুটপাতে স্কুলের পোশাক পরা ভাইরাল ছবির মরিয়ম-হাছনার গল্প



১০-১২ দিন আগে ফেসবুকে ঘুরে বেড়াচ্ছিল স্কুলের পোশাক পরা দুটি শিশুর ছবি। ছবিটিতে দেখা যাচ্ছিল স্কুলের পোশাক পরা দুটো মেয়েশিশু। একটি শিশু মুখে কিছু মাখছে। আরেকটি শিশুর চুল আঁচড়ে বেঁধে দিচ্ছেন একজন নারী। পাশে ছড়ানো পলিথিনের ওপর বিছানা পাতা। মাদুর-কাঁথা-বালিশ। তার পাশে প্লাস্টিকের পানির বোতল, স্যান্ডেল ইত্যাদি। ছবি দেখলেই বোঝা যায়, ছবির তিনজনের বসবাস এই ফুটপাতেই।

এ শহরে ফুটপাতে সংসার পাতার দৃশ্যে চোখ অভ্যস্ত। তবে সেই সংসারে মলিন, জীর্ণ মানুষই বেশি চোখে পড়ে। স্কুলে যাওয়ার জন্য শিশুর প্রস্ততি চোখে পড়ে না। নাগরিক জীবনের সব সুবিধাবঞ্চিত ও নিরাপত্তাঝুঁকির মধ্যে থাকা শিশু দুটোকে দেখে যেমন খারাপ লাগছিল, তেমনি ইচ্ছা করছিল এই অদম্য ইচ্ছাশক্তির শিশুদের একবার দেখে আসতে!

ভাইরাল সেই পোস্টের কমেন্ট দেখে জানলাম, রাজধানীর পলাশীর মোড়ের পাশের কোনো ফুটপাতে থাকে এই শিশুরা। ১০ অক্টোবর শুক্রবার ছবির পেছনের দেয়ালচিত্রের সঙ্গে মিলিয়ে খুঁজে পেলাম তাদের থাকার জায়গা। গিয়ে দেখি, তাদের বিছানাপত্র গুছিয়ে পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখা। একজনকে জিজ্ঞেস করতেই দেখিয়ে দিল ছবির সেই নারীকে। আশপাশের লোকজনের কাছ থেকে জানা গেল, ওই নারীর নাম হামিদা বেগম (৪৫)। শিশু দুটির একটি তাঁর মেয়ে, অপরটি নাতনি। কিন্তু কথা বলতে গিয়ে রীতিমতো বাধার মুখে পড়তে হলো। হামিদা বেগম রেগে গেলেন। কথা বলবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিলেন। রাগান্বিত হয়ে ফুটপাতের এপ্রান্ত-ওপ্রান্ত দ্রুতগতিতে পাঁয়চারি করতে লাগলেন। গজগজ করতে করতে বলছিলেন, ‘৪০ বছর ধইরা এই ফুটপাতে আছি। এদ্দিন পর সাংবাদিক আসে, এ আসে ও আসে। এত দিন কই ছিলে এরা?’

হামিদা বেগমের রাগ দেখে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছিলাম তাঁর রাগ কমা পর্যন্ত কী অপেক্ষা করব, নাকি চলে যাব। হামিদা বেগমের রাগ কমার কোনো লক্ষণ না দেখে সেদিনের মতো ফিরে এলাম। তবে দমে গেলাম না! হামিদা বেগমের ক্ষোভ তো অমূলক নয়। সেদিন নামও জানা হলো না শিশু দুটির।

এবার জানা হলো ওদের নাম ও স্বপ্নের কথা

দ্বিতীয় দিন ১২ অক্টোবর রোববার দুপুরে হামিদা বেগমের ফুটপাতের সংসারে গিয়ে আবারও তাঁর ক্ষোভের মুখে পড়তে হলো। তবে এবার তাঁর রাগ দীর্ঘস্থায়ী হলো না। তিনি কাছে ডেকে নিয়ে কথা বললেন। তবে কীভাবে ঢাকায় এলেন, কী করতেন, কী করেন, কয় ছেলেমেয়ে—ব্যক্তিগত প্রসঙ্গের প্রশ্নগুলো এড়িয়ে যাচ্ছিলেন। তাঁকে চাপাচাপি করা সমীচীন মনে হলো না। তিনি যতটুকু বলতে চান, ততটুকুই শোনা হলো।

শিশু দুটির নাম মরিয়ম (৯) ও হাছনা (৬)। হাছনা হামিদা বেগমের মেয়ে আর মরিয়ম তাঁর নাতনি। মরিয়মের বয়স যখন দেড় বছর, তখন তার মা মারা যান। মরিয়মের মায়ের মৃত্যুর আগেই বাবার সঙ্গে বিচ্ছেদ ঘটে। বাবা কখনো মরিয়মের খোঁজ নেন না। নানির কাছেই বড় হচ্ছে মরিয়ম। কথা বলার সময় স্কুল থেকে ফিরে মরিয়ম ও হাছনা দুপুরের খাবার খেতে বসেছে। কাছের এক হোটেল থেকে খাবার কিনে আনা হয়েছে। মেন্য—ভাত আর শুঁটকিভর্তা।

হামিদা বেগম জানান, মরিয়ম ও হাছনা দুজনেই পড়ে পলাশী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। মরিয়ম বলে, ‘আমি পড়ি বড় ওয়ানে আর অয় (হাছনা) পড়ে ছোট ওয়ানে।’ তাদের স্কুলে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়া গেলেও এরপরও পড়াশোনা করতে চায় তারা। মরিয়ম বড় হয়ে চিকিৎসক হতে চায়। আর হাছনা যোগ দিতে চায় সেনাবাহিনীতে। হামিদা বেগমের ইচ্ছা, তাঁর মেয়ে ও নাতনি পড়ালেখা করে মানুষের মতো মানুষ হোক। হামিদা বেগম বলেন, ‘আমরা বাবা ৪০ বছর রাস্তায় থাকি। কাউয়ার (কাক) মতো এই রাস্তা থেকে ওই রাস্তায় যাই। চাউল আনি, ভাঙা ডিম (কম দামে পাওয়া যায় বলে) আনি, এডি রান্না করে খাই। ওদের আমি অনেক বড় করুম, এই জন্য স্কুলে ভর্তি করাইছি।’




পলিথিনের ওপর মাদুর আর কাঁথা বিছিয়ে থাকেন তাঁরা। কষ্ট পেতে হয় রোদ, বৃষ্টি, ঠান্ডায়। ইট জড়ো করে চুলা বানিয়ে রান্না করেন কখনো, আবার কখনো হোটেল থেকে কিছু কিনে খান। না খেয়েও থাকতে হয় কখনো কখনো। দূর থেকে পানি এনে গোসল করতে হয় তাঁদের। হামিদা বেগমের স্বামী অন্যের ফলের ভ্যানে ফল বিক্রির কাজ করেন। দিনে রোজগার হয় ২০০ থেকে ৪০০ টাকা। এই টাকায় চলে তাঁদের চারজনের পরিবার।

ওই ফুটপাতে শুধু মরিয়ম আর হাছনাই নয়, রয়েছে আরাফাত (৭), আমান (৬) ও রাইসা (৩)। শেষের এই তিন শিশুর বাবার নাম রাকিব, মায়ের নাম পাখি। রাকিব রিকশা চালান। এই ফুটপাতে পরিবার নিয়ে আরও থাকেন মসকুদ আলী। তিনি ভাঙারির দোকানে কাজ করেন। তিনি জানান, তাঁর নাতি সাইফের বয়স চার বছর। এই পরিবারগুলোও তাঁদের শিশুদের মরিয়ম ও হাছনার মতো স্কুলে পাঠাতে চায়। অভিজ্ঞতা থেকে তাঁরা বলেন, আসছে শীতে কাজের খোঁজে এই ফুটপাতে তাঁদের সঙ্গে যোগ দেবে আরও কয়েকটি পরিবার। হয়তো সেই পরিবারেও শিশু থাকবে। ওই পরিবারগুলোও হয়তো তাদের সন্তানদের স্বাভাবিক একটি জীবনের স্বপ্ন দেখবে। সেসব স্বপ্নপূরণের পথ কেউ তৈরি করে দেবে কি না, কে জানে!

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) ও ইউনিসেফ প্রকাশিত ‘সার্ভে অন স্ট্রিট চিলড্রেন ২০২২’ শিরোনামের জরিপ প্রতিবেদনের তথ্য অনুসারে, জরিপে অংশ নেওয়া পথশিশুদের ৩০ শতাংশ খোলা জায়গায় থাকে, ৩৬ শতাংশ কখনো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যায়নি। ৯১ শতাংশ পথশিশু কাজে যুক্ত। দেশের আট বিভাগের ৫ থেকে ১৭ বছর বয়সী ৭ হাজার ২০০ পথশিশুকে জরিপে নমুনা হিসেবে নেওয়া হয়। এই শিশুদের ৪৯ শতাংশ ঢাকায় থাকে।


444444444


আগুন নিয়ন্ত্রণে, ৭ ঘণ্টা পর সচল শাহজালাল বিমানবন্দর

সাত ঘণ্টা পর ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজের আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। এরপর উড়োজাহাজ ওঠানামাও শুরু হয়েছে।


বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় আজ শনিবার রাত ৯টার পর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার কথা জানায়।

আজ বেলা সোয়া ২টায় আগুন লাগার পর তা নেভাতে কাজ শুরু করে ফায়ার সার্ভিস। বাহিনীর ৩৭টি ইউনিট সেখানে কাজ করে।  

রাত ৯টা ১৮ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। এই বাহিনীর পরিভাষায়, আগুন যখন ছড়ানো বন্ধ করা যায়, তখন বলা হয় নিয়ন্ত্রণে, পুরোপুরি নেভানো হলে বলা হয় নির্বাপণ।



আগুন লাগার পরপরই দেশের প্রধান এই বিমানবন্দরে সব ধরনের উড়োজাহাজ ওঠানামা বন্ধ F হয়ে যায়। রাত ৯টা থেকে ফ্লাইট চালুর উদ্যোগ নেওয়ার কথাও জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রাত ৯টার পর দুবাই থেকে আসা একটি ফ্লাইট শাহজালাল বিমানবন্দরে অবতরণ করেছে।


সন্ধ্যার পর অগ্নিকাণ্ডস্থল পরিদর্শনে গিয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘আমরা যত দ্রুত পারি এয়ারপোর্ট (বিমানবন্দর) চালু করব। কারণ, আপনারা জানেন, এয়ারপোর্টে এই মুহূর্তে বিমান ওঠানামা বন্ধ আছে। আমরা চেষ্টা করছি যে যত দ্রুত পারি, আজ রাতের মধ্যে ফ্লাইট ওপেন করব।’

এই অগ্নিকাণ্ডে কেউ নিহত হননি। তবে আগুন নেভাতে গিয়ে কয়েকজন আনসার সদস্য আহত হন বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা।


MKRdezign

Contact Form

Name

Email *

Message *

Powered by Blogger.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget